------------তুই আমার-----------
------------পর্ব-২১-----------
আমাকে তূর্য ইশারায় বলছে সামনে তাকানোর জন্য সামনে তাকাতেই আমার চোখ বেরিয়ে আসার উপক্রম নিশুউউউউ.... তাও আবার জাহিদ ভাইয়ের সাথে...!!!! কেমনে কি..... নিশু তো একে সহ্যই করতে পারে না পুরো সাপে নেউলে সম্পর্ক.... তাহলে ও ভাইয়ার সাথে কি করছে .... তাও ঝগড়া করছে না শান্ত মেয়ে হয়ে চুপচাপ উনি যা করছে তাই মেনে নিচ্ছে....??? তাহলে কি নিশুও....?
আমি
উনার দিকে তাকাতেই দেখি দাঁত৩২ টা বের করে হাসছে....... এখন মেজাজ আমার সেই লেভেলের খারাপ হচ্ছে....... তাই বললাম যদি আর একবার দাঁত বের করে হেসেছেন তো.... আপনার হাসার জন
্য দাঁত একটাও আস্ত থাকবে না ...... নাও চয়েজ ইজ ইউরস.... আমার কথা শুনতেই তূর্যর মুখে বর্ষাকালের যেরকম মেঘ হয় ঠিক তেমনি উনার মুখ টা মেঘে ঢেকে গেছে...... বেচারা দাঁত ভাঙার ভয়ে চুপসে গেছে..... আহহ তাহলে একে শায়েস্তা করতে একটু হলেও পেরেছি......
তূর্য : আমি একে যতটা ডেন্জারাস ভেবেছিলাম এ তার থেকেও বেশি!!
একি অঙ্গে কত রূপ..... আচ্ছা এই মেয়ে কি ড্রাগস নেয়...???? নাহলে ওর প্রতি কেন আমি এত আসক্ত হই বার বার ওর নেশায় আটকে গেছি সেই প্রথম দেখায়..... এই মেয়েটার মধ্যে কি আছে যা আমাকে বাধ্য করে ওর প্রেমে পরতে... নিজেকে ওর মায়ায় শেষ হতে ওর এই রাগী মাখানো কন্ঠে দুষ্টু কথা আর বেশি করে ওর প্রেমে পরতে বাধ্য করে..... নিশ্চয়ই এই মেয়ে প্রতিদিন মায়া মেশানো ড্রাগস নেয়......... তা না হলে আমি এতটা
পাগল হতাম না বড্ড বেশি ভালোবেসে ফেলেছি মায়াবতী তোমাকে.... তোমাকে ছাড়া নিশ্বাস টা নিতেও দম আটকে আসে... খুব বেশি করে তোমাকে চাই...
আমি নিশুউ বলে দিলাম এক চিৎকার...... জাহিদ ভাই যেন এই সময়ে আমাদের মোটেও আশা করে নি সেটা তার মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে উনি তূর্যর দিকে করুন চোখে তাকালো... তূর্যও ওকে ইশারায় বলল যে কিছু হবে না আমি আছি.....নিশুকে প্রশ্ন করলাম
তুই এত রাতে একা একা ভাইয়ার সাথে কি করছিস.....??? মাঝ রাতে এখানে এসেছিস কেন আমাকে না বলে...????? চোখ মুখ শক্ত করে প্রশ্ন করলাম।নিশু যে ভয় পেয়ে গেছে তা ওর কাপা গলা শুনেই বোঝা যাচ্ছে.... আমিও কম কি তাই আরেকটু ঘাবরে দেয়ার জন্য রেগে বললাম.... কিরে এরকম তোতলামি করছিস কেন তুই কি চুরি ডাকাতি করেছিস যে এমন ঘাবড়ে গেছিস.... এখন বল এত রাতে এখানে কি করছিস....
নিশু : বুঝে গেছি যে আমার জানু টা রেগে গেছে তাই সব বলতেই হবে নাহলে যে ও কি করবে সেটা আমার থেকে ভালো কেউ জানে না...
আসলে জানু আমার দোষ নেই তোর সাথে গল্প করতে করতে ঘুমিয়ে গেছিলাম..
............একটু আগে........
নিশু : আমি ঘুমের মধ্যেই বুঝতে পারছি যে আমি হাওয়ায় ভাসছি কিন্তু সেটা স্বপ্ন মনে করে ততটা গুরুত্ব দেই নি.. কিন্তু একটুপরে বুঝতে পারলাম যে আসলেই আমি কারো কোলে হাওয়ায় ভাসছি চোখ খুলে তাকাতেই দেখি ঐ বেটা লুচু জাহিদ আমাকে কোলে করে নিয়ে যাচ্ছে আমি কথা বলতে পারছি বুঝলাম আমার মুখ বাধা... তখন ভেবেছিলাম সন্ধ্যায় উনার সাথে ঝগড়া করেছিলাম জন্য আমাকে নিশ্চয়ই ছাদ থেকে ফেলে দিবে....
তখনই উনি আমাকে কোল থেকে নামিয়ে দিলেন আর বললেন.....
জাহিদ : দেখো নিশুপাখি আমি তোমাকে কিছু কথা বলবো বলে এখানে নিয়ে এসেছি।আমি বললে তুমি আসতে না তাই এভাবে নিয়ে এসেছি জানি এটা ঠিক হয়নি তারপরেও নিয়ে এসেছি..... তোমার মুখ খুলে দিব কিন্তু কোনো রকম চেচামেচি করবে না প্রমিজ...???
নিশু : আমিও বাধ্য মেয়ের মতো মাথা নাড়ালাম যার অর্থ এই যে চেচামেচি করবো না.... (ওরে বিল্লি তোর সাহস কেমনে হয় আমাকে এখানে আনার আমাকে ভয় দেখানো একবার সুযোগ পাই এমন টাইট দিব তে সারাজীবন মনে রাখবি.... মনে মনে)
জাহিদ :দেখো নিশু আমি আর পাচটা ছেলেদের মতো না যে মনের কথা উপন্যাসের মতো করে সাজিয়ে গুছিয়ে বলবো আমার পক্ষে এগুলো সম্ভব না তাই যা বলার সোজাসুজি বলছি.....
আমি তোমাকে ভালোবাসি যেদিন প্রথম দেখেছিলাম সেদিনই ভালো লেগে গেছিলো... আর তোমার মায়ায় আটকে গেছিলাম.. তোমাকে ইচ্ছে করেই রাগিয়ে দিতাম যাতে তুমি রেগে গিয়ে ঝগড়া করো... আসলে রেগে গেলে তোমাকে অনেক কিউট লাগে তাই এই সুযোগ টা হাত ছাড়া করতে চাইনি.... আমি তোমার ডিসিশন জানতে চাই নি আর হ্যা তুমি যদি আমাকে বিয়ে করতে রাজি না হও তাহলে তুলে নিয়ে গিয়ে বিয়ে করবো দেন যখন আমাদের এক ডজন ছেলেমেয়েকে হবে তখন তোমার বাবা মার সামনে গিয়ে কিউট করে বলবো যে এরা আপনার নাতিনাতনী... এখন বলো তুমি কি করবে....!!!!
নিশু : আমি কিছু বলবো তখনই দেখি মেহু নিশুউউ বলে ডাক দিলল
....... এখন..........
নিশু : জানু বিশ্বাস কর আমি আসিনি এই লুচুটা নিয়ে এসেছে আমাকে... আর আমাকে থ্রেট ও দিয়েছে এখন কি করবো বল..??
আমিও সেই সিরিয়াস একটা মুড নিলাম....( মনে মনে ভাবছি জাহিদ ভাইয়া দেখি তূর্য ডেভিল টার থেকেও একধাপ এগিয়ে ডিরেক্ট বাচ্চা হায় কপাল....)
একটু রাগি ভাব নিয়ে বললাম ভাইয়া......!!! এসব কি সত্যি....???
জাহিদ : মাথা নিচু করে.. হুমম ভাবি
আমি এবার জোরে হেসে দিয়ে বললাম ভাই এখনো ওয়েট করছেন কেন এখুনি বিয়ে টা করে বাচ্চার মিশন শুরু করে দিন। আমার খালামনি আর চাচিমনি ডাক শুনার জন্য ওয়েট করতে পারছি না
আমার কথায় নিশু বলল
নিশু : জানু তুই আমার বেস্টু হয়ে এসব বলছিস!!! তুই ঐ লুচুটার সাপোর্ট নিচ্ছিশ....????
কেন জানু আমি যখন আমার বিয়ে কিভাবে হয়েছে তূর্যর সাথে বলেছিলাম তোকে তুই সব শুনে কি বলেছিলি।হাউ কিউটটট মেহু কি ভালোবাসে তোকে ভাইয়া।তো নিজের বেলায় এখন বলছিস না কেন পেত্নি..... এইবার লও ঠ্যালা জানু আমার তো সেই খুশি লাগতাছে ওহহহ কি শান্তি আমার বাশের চেয়েও তোর বাশটা একটু এগিয়ে নিশু ডিরেক্ট বাচ্চা!!!! আমি বাঁশ খামু আর তুমি আমার কলিজার জান্টুস হইয়া খাইবা না তা কেমনে হয় জানু। এইবার সমান সমান...... তুমিও থ্রেট খাইয়া বিয়া করবা আমিও করছি.... নাহলে আমাদের বেস্টু জাতিরে অপমান করা হইতো
ভাইয়াকে বললাম......
ভাইয়া সুখবর টা কবে পাচ্ছি...!! তখনই আমাকে তূর্য বলল...
তূর্য : আগে আমি সুখবর টা দেই আমাদের......???
তূর্য : আমাদের সুখবর টা আগে দেই জাদিদরা ওদের সুখবর দেওয়ার আগে.....???
তূর্যর কথায় আমি মনে আকাশ থেকে টুপ করে খসে পরলাম... কি বলছে এই ছেলে...সুখবর মানে..!!!কিসের সুখবর......!!!! মানে বেবির কথা বলছে.....??? দিলামম এক চিৎকার...... নাআআআআআ!!!!
কিসব বাজে বকছেন আপনি...??? আপনার মাথা ঠিক আছে তো....?? নাকি মেয়াদ উর্ত্তীণ গাঁজা খাইসেন....??? আমি নিজেই তো একটা বাচ্চা এখন আমার কি করে বাচ্চা হবে....!!!! তখনই নিশু বলে উঠলো...ওর কথায় ওর চুল গুলো টেনে ছিড়ে ফেলতে ইচ্ছে করছে....
নিশুকি বাচ্চি..... আমার কেন বেবি হবে...??? হবেতো তোর.... তাও একডজন মানে একটা ক্রিকেট টিম..... কি বলেন জাহিদদদ ভাইয়া.... আর ঐ সূর্য তোর কোন জন্মের ভাই লাগে....??? বেয়াদব মাইয়া ভাইয়ের লগে মিরজাফর আর ঘষেটি বেগমের মতো কূটনীতি করস আমার বিরুদ্ধে...??? আমি আজকে অসহায় সিরাজউদ্দৌলা বলে..
নিশু তুই আমার সাথে কথা বলবি না আজকে থেকে... তোর ঐ পাতানো ভাই নিয়া থাক.... আর ভাইয়া আপনি... এই ঘষেটি বেগমেকে(নিশু) ক্রিকেট টিম কেন ফুটবল টিমেরও মা বানান তাতে আমার কোনো প্রবেলেম নেই... এই বলেই চলে আসার জন্য পা বাড়াতেই নিশু বললো....
নিশু: জানু রেগে আছিস কেন আমার উপরে...!! আমি তো মজা করছিলাম... প্লিজ জানু রাগ করিস না....
আপনি কে....?? আমি কি আপনাকে চিনি!!!! ও হ্যা আপনি তো ঘষেটি বেগম... শুনুন আপনি আপনার ঐ পাতানো ভাই নিয়ে থাকেন আমার কাছে কি... এই বলেই চলে এলাম....
রুমে এসেই হেসে গড়াগড়ি খাচ্ছি পেট ব্যাথা হয়ে গেছে সবগুলোর মুখ জাস্ট দেখার মতো হয়েছিল.... ইশশশ আমার নিশুপাখি টা কষ্ট পেয়েছে অনেক...
পাইলে পাকক হু.... নিশু আমার বেস্টু হইয়া ঐ সূর্যের সাপোর্ট নিলো কেন....??? একটু শিক্ষা দেওয়া দরকার সারাদিন সূর্য সূর্য করে এইবার লও ঠ্যালা.........
হাসছি পেট ধরে তখনই তূর্য এসে বললো....
তূর্য : বুঝে গেছি আমার মায়াবতী রেগে আছে... রুমে ঢুকতেই দেখি ও পেট ধরে হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাচ্ছে.... কাহিনী কি কিছুই বুঝলাম না.... একটু আগে ত রেগে ছিল আর এখন এমনভাবে হাসছে কেন.....
মায়াবতী...... হাসছো কেন....?? এইভাবে....কি হয়েছে.....???
এমনি হাসছিলাম।আপনার কি হু এই বলেই কাঁথা মুরি দিয়ে শুয়ে পরলাম আমার ব্যবহারে যে তূর্য বেক্কল বনে গেছে সেটাতে কোনো সন্দেহ নেই.... আমার ভিষন হাসি পাচ্ছে... ইশশশ এই অবস্থায় সূর্য মামার ফেস টা কেমন দেখতে লাগে সেটা দেখার জন্য মনটা ছটফট করছে।কিন্তু কি করার তাই এসব ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে গেলাম....
তূর্য : এটা কি হলো...!!! ও এমন অদ্ভুত আচরণ করলো কেন....?? এই মেয়ে আসলেই অদ্ভুত একে বোঝা বড় দায়....তাই আমিও গিয়ে ওকে জড়িয়ে ধরে ঘুমিয়ে পরলাম..
সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি তূর্য নেই।হয়তো নিচে আছে তাই আমিও ফ্রেশ নিচে গেলাম... দেখি সবাই বসে আছে নিশু জাহিদ মামনি বাবাই আর তূর্যর সাথে কে যেন একটা....সামনে এগিয়েই আমি অবাক...উনি এখানে কি করছে.....????
একি আপনি......!!!!
-----------(((বিরতি)))-----------